Wednesday 18 February 2015

Post # 014



"আল্লাহ্ তোমাদেরকে শান্তিনিকেতনে প্রবেশ করবার জন্যে দাওয়াত করছেন।" [আল কুরআন, ১০:২৫]

আজ ১৮ই ফেব্রুয়ারি। ১৯০১ সালের আজকের এই দিনেই সূফী হাবিবুর রহমান (রঃ) পৃথিবীতে এসেছিলেন। পরিপূর্ণ এক জীবন শেষে ২০০১ সালের আজকের এই দিনেই তিনি ফের ফিরে যান পরম বন্ধু আল্লাহর কাছে।
তাঁর দুনিয়ার জীবনের অন্তিম কিছু মুহূর্তের বর্ণনা পাওয়া যায় লেখক ত্রয়ী মুহাম্মদ মাহমুদুল হক, মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম এবং মাওলানা নূর মোহাম্মদ রচিত সূফী হাবিবুর রহমান (রঃ)-এর আধ্যাত্মিক জীবন-চরিত, ‘লুকানো মানিক’ বইয়ের প্রথম সংস্করণের ১৫৯ নম্বর পৃষ্ঠায়।
“....পরের দিন ১৮ই ফেব্রুয়ারি... তাঁহাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে নেওয়া হয়... অন্য কোন কথা না বলিয়া তিনি বারবার ইশারায় নামাজের নিয়াত বাঁধিতেছেলেন আর পড়িতেছিলেন—কুরআন শরীফের ১০:২৫ নং আয়াত ও উহার ভাবার্থঃ-
ওপার হতে বন্ধু মোরে ডাকছে নানা ছলে
তোদের ছেড়ে নিজ দেশেতে যাব এবার চলে;
ও ভাই তোরাও তাঁরে রহিস না রে ভুলে,
প্রেম-কিস্তিতে পার হয়ে যা, আশার বাদাম তুলে।
এই সময়ে তিনি সূফী অদুদুর রহমানকে দুই/তিনবার বলেন, 'বাবা, দুনিয়াটা একটা বাজার, এখানে যে ভাল সওদা করিবে সে পরকালে ভাল থাকিবে আর যে খারাপ সওদা করিবে সে পরকালে খারাপ থাকিবে।'
হাসপাতালে অক্সিজেন দেওয়া অবস্থায় তিনি সর্বশেষ বেলা আনুমানিক ৩-০০ টা পর্যন্ত এই ভাবেই আয়াত, কবিতা, আল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌ জিকির ও কালিমা তাইয়্যেবা পড়িতেছিলেন। বৈকাল ৪-৩০ মিনিটের দিকে তিনি চক্ষু মুদিত করিয়া নিঃশব্দে জিকির করিতে থাকেন। সন্ধ্যা ৬-০৫ মিনিটের সময় তিনি পরপর তিনবার সামান্য ঢেঁকুরের মত শরীর ঝাঁকুনী ও দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া ইহধাম ত্যাগ করতঃ তাঁহার পরম বন্ধু আল্লাহ্‌ তায়ালার সান্নিধ্যে চলিয়া যান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। তখন তাঁহার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমিয়া ছিল, চক্ষু ও মুখ বন্ধ অবস্থায় ছিল, তিনি উত্তর শিয়রী ছিলেন, ঐ মুহূর্তে মুখমণ্ডল একটু ডান দিকে ফিরাইয়াছিলেন। ইন্তেকালের কিছুক্ষণ পূর্বে তিনি কাহারও সালামের জবাব লওয়ার মত করিয়া ডান হাত উঁচু করিয়াছিলেন।... ইন্তেকালের পূর্বে তাঁহাকে যে স্যালাইন দেওয়া হইয়াছিল, ইন্তিকালের পরও উহা খোলার পূর্ব পর্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে পূর্বের ন্যায় ফোঁটায় ফোঁটায় উহা শরীরে যাইতেছিল।”


No comments:

Post a Comment